নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্রেপ্তারের জন্য পুরস্কার ঘোষণার ২০ বছরেও খোঁজ মেলেনি একসময়ের রাজধানী কাঁপানো ১২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর। এদের সঠিক অবস্থানও জানা নেই পুলিশের। মোস্ট ওয়ানটেড হিসেবে এখনো পুলিশের তালিকায় সবার উপরে তাদের নাম। তাদের নাম করে রাজধানীতে ঘটছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি এমনকি খুনাখুনির ঘটনা। এছাড়া তাদের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে গ্রুপ।
শীর্ষ এই সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘পুরস্কার ঘোষিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলকে জানানো হয়েছে। এছাড়া রাজধানীতে তাদের নাম করে চাঁদা চাওয়ার ঘটনাও কম। তবে তারা যেহেতু এদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সেহেতু তাদেরকে যেন আইনের আওতায় আনা যায় সে ব্যাপারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার অভিযোগে দুর্ধর্ষ ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ধরিয়ে দিতে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর বিভিন্ন সময় ২৩ সন্ত্রাসীর মধ্যে গ্রেপ্তার ও ক্রসফায়ারে মারা যাওয়ার পর এখনো ১২ শীর্ষ সন্ত্রাসী আইনের আওতার বাইরে রয়েছে। তারা কোন দেশে অবস্থান করছে সে ব্যাপারেও পুলিশ নিশ্চিত কিছু বলতে পারে না। তবে বিভিন্ন সময় তাদের অবস্থানে নিয়ে নানা তথ্য এসেছে পুলিশের কাছে। এই তথ্যকে সঠিক বলেও মনে করে না পুলিশ। তবে তাদের ব্যাপারে ইন্টারপোলের নিকট তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বলা হয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তার এড়িয়ে থাকা পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীরা হলো হারিস আহম্মেদ ওরফে হারেস পিতা মৃত আবদুল ওয়াদুদ, সাং-ডি/৯ নুরজাহান রোড, থানা- মোহাম্মদপুর, জব্বার মুন্না মানিক, পিতা আব্দুস সোবহান, সাং-আটপাড়া, থানা ও জেলা নেত্রকোনা, বর্তমান-১৮/রাজিয়া সুলতানা রোড, থানা মোহাম্মদপুর। কালা জাহাংগীর, পিতা গোলাম রহমান, সাং বনানী, থানা ধুনট, জেলা বগুড়া, বর্তমানে ১৩১/১, আদর্শ পল্লবী ইব্রাহিমপুর, থানা কাফরুল, জাফর আহম্মেদ ওরফে মানিক, পিতা আ. হালিম, সাং আখানগর, থানা নবীনগর, জেলা বি-বাড়িয়া, বর্তমান বাসা নং ২৩১ উত্তর শাহজাহানপুর, থানা মতিঝিল। প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, পিতা বিমল চন্দ্র বিশ্বাস, সাং-৪১৭/৩ দক্ষিন পাইকপাড়া থানা মিরপুর। মোল্লা মাসুদ, পিতা আমজাদ হোসেন, সাং মহাদেবপুর, থানা ও জেলা ঝালকাঠি বর্তমান ১৪/মীরবাগ, থানা রমনা। শামীম আহম্মেদ ওরফে আগা শামীম, পিতা ডা. সামসুদ্দীন, ৪১ আব্দুল হাদী লেন, থানা কোতোয়ালি। ত্রিমতি সুব্রত বাইন, পিতা বিপুল বাইন, সাং সুতারপাড়, থানা গৌরনদী, জেলা বরিশাল, বর্তমান ১/টি/৭ মীরবাগ এবং ১৮৬/ নয়াটোলা রোড মগবাজার, থানা রমনা। কামরুল হাসান ওরফে হান্নান, পিতা মৃত মমিন উদ্দিন হাওলাদার, সাং ক্রোকেচর, থানা শিবচর, জেলা মাদারীপুর, বর্তমানে ১৪/সি মনা টাওয়ার, ইস্কাটন। খন্দকার তানভীর ইসলাম ওরফে জয়, পিতা খন্দকার নুরুল ইসলাম, সাং বানিয়াপাড়া, থানা মির্জাপুর, জেলা টাংগাইল, বর্তমান ৪৩/৮/১৬ ইন্দিরা রোড, থানা তেজগাঁও। আমিনুর রসুল সাগর ওরফে টোকাই সাগর, পিতা মো. পিতা বকর সিদ্দিক, সাং বাউরিয়া, থানা সন্দীপ, জেলা চট্টগ্রাম, বর্তমান বাড়ি নং ২৯, সড়ক নং ৩৯, গুলশান সর্বশেষ ঠিকানা ৪১২ আশকোনা উত্তরা, ঢাকা। ইমাম হোসেন, পিতা আ. মান্নান, সাং জিপি-চ-৩৯, মহাখালী ওয়্যারলেস গেট।
তবে এসব সন্ত্রাসীর নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা না বলতে পারলেও পুলিশের কাছে থাকা তথ্যে জানা যায়, টোকাই সাগর আমেরিকার নিউইয়র্কে অবস্থান করছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম প্রকাশের পরপরই সে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিদেশে চলে যায়। সুব্রত বাইনকে নেপাল থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রকাশ কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা। বাংলাদেশে থেকে যাওয়া সন্ত্রাসীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা সে-ই করে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে।
এ ছাড়া ইমাম হোসেন ভারতে। জিসান দুবাইয়ে অবস্থান করছে। জয় গ্রেপ্তার হলেও সে বর্তমানে বেরিয়ে ভারতেই অবস্থান করছে। আগা শামীম সুইজারল্যান্ড ও জব্বার মুন্নার অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। কালা জাহাঙ্গীর মারা গেছে বলে জানে তাদের পরিবার। হারিস ভারতে আটক থাকতে পারে বলে পুলিশ বলছে।
এদিকে পলাতক এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামে রাজধানীতে এখনো চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির ঘটনা ঘটছে। রাজধানীর পুরান ঢাকা, বংশাল, হাজারিবাগ, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কাফরুল, মিরপুর, রামপুরা, মৌচাকসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় পলাতক এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম করে বিভিন্ন গ্রুপ উপ-গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। যারা এসব এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে।
সম্প্রতি কয়েকটি টেন্ডারবাজির ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কথা গোয়েন্দা পুলিশ রেকর্ড করার ঘটনা রয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় শাহাদাতের নাম করে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে আসছে।
শীর্ষ এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দেশে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা কি এমন প্রশ্নে মহানগর পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘আমরা বর্তমানে দুই মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এক. ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুই. নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে। তারা কখন দেশে আসে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে সোর্স রাখা হয়েছে।
ডাকাত শহীদের উদাহরণ টেনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাত শহীদ ভারতে পালিয়েছিল। সোর্স এবং গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায় সে দেশে এসেছে। এরপর র্যাবের সাথে বন্দুকযদ্ধে সে মারা যায়।’ তিনি বলেন, ‘পলাতক সন্ত্রাসীরা দেশে আসা মাত্রই গ্রেপ্তার করা হবে। এছাড়া শীর্ষ এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
ওইসব সন্ত্রাসীর নাম করে চাঁদাবাজির, ছিনতাই, টেন্ডারবাজিসহ অন্যান্য অপরাধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পলাতক এই সন্ত্রাসীদের নাম করে রাজধানীতে চাঁদাবাজি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা কম। তারপরেও তাদের নাম করে রাজধানীতে যেন কোন ধরনের অপরাধ সংঘটিত না হয় সে ব্যাপারে নজরদারি রাখছি।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : সামিউল্লাহ সামি। নির্বাহী সম্পাদক : মহসিন রায়হান। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আকরাম হোসাইন। সহ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : ওমর ফারুক। আইন উপদেষ্টা : মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট বাংলাদেশ সু্প্রিম কোর্ট ঢাকা।
প্রধান কার্যালয় : ২১৯ মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএকে টাওয়ার (৯ম তলা), প্লট নং ১/এ, নিশাত নগর, তুরাগ, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। 📲 মোবাইল : ০১৭১৩৯২৬২৭৭, ০১৭১০১০১৬৯৯। বিজ্ঞাপন : ০১৭৭ ৯৭৪৬৬০৭ ☎️ ফোন : +৮৮০৯৬৩৮১৯২৪।
📧 Email : khoborerdakghar@gmail.com
“দৈনিক খবরের ডাকঘরে” প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখক/প্রতিনিধির। আমরা লেখক/প্রতিনিধির চিন্তা ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল সব সময় নাও থাকতে পারে । তাই যে কোনো লেখার জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। ডেইলি খবরের ডাকঘর
about-us contact-us privacy-policy terms-and-conditions
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত খবরের ডাকঘর. কম ©২০১৮ -২০২১||
Leave a Reply