ক্রীড়া ডেস্ক : চূড়ান্ত নাটকীয়তা মঞ্চস্থ হলো মাঠে। পেন্ডুলামের মত দুলতে দুলতে ম্যাচটা থেমে গেলো একেবারে মাঝ বরাবর। কেউ জিতলো না। দিল্লির স্কোর ১৫৭, পাঞ্জাবের স্কোরও ১৫৭। সুতরাং, ম্যাচ গড়ালো সুপার ওভারের চূড়ান্ত রোমাঞ্চে। সেখানে পাঞ্জাবকে হারিয়ে শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচটি জিতে নিলো দিল্লি ক্যাপিটালস। তবে সুপার ওভারে এসে চূড়ান্ত ফ্লপ প্রীতি জিনতার দল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।
প্রথমে ব্যাট করতে এসে মাত্র ২ রান তোলে পাঞ্জাব। ব্যাট করতে আসেন লোকেশ রাহুল ও নিকোলাস পুরান। মায়াঙ্ককে পাঠাননি পাঞ্জাব থিঙ্কট্যাঙ্ক; দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে বল করতে আসেন কাগিসো রাবাদা। রাবাদার প্রথম বলে রাহুল ২ রান নিলেও পরের ডেলিভারিতে ডিপ স্কোয়ারে ক্যাচ তুলে আউট হন তিনি। পরের ডেলিভারিতে নিকোলাস পুরানের স্ট্যাম্প ছিটকে দেন রাবাদা। ফলে সেখানেই শেষ পাঞ্জাবের ইনিংস। জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ শামির প্রথম বলে কোনো রান নেননি রিশাভ পান্ত। পরের বলে দিলেন ওয়াইড। পরের বলে ২ রান নিয়ে নিলেন পান্ত। স্রেয়াশ আয়ার শুধু তাকে সঙ্গ দিলেন। সুপার ওভারে খুব সহজেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো দিল্লি।
তার আগে পেন্ডুলামের মতো ম্যাচ ঘুরছিল এদিক থেকে ওদিকে। কখনও দিল্লি এগিয়ে তো কখনও পাঞ্জাব। শেষ পর্যন্ত স্কোরও হয়ে গেলো সমান। ফলে চলতি আইপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচই সাক্ষী থাকল সুপার ওভারের। একদিকে, স্টোইনিজের ঝড়ো ব্যাটিং। অন্যদিকে, মায়াঙ্ক-শামির দুরন্ত পারফরম্যান্স। খাতায় কলমে উত্তর ভারতের ডার্বি হল আর পাঁচটি ডার্বি ম্যাচের মতোই। যদি শেষপর্যন্ত সুপার ওভারে বাজিমাত করল দিল্লি ক্যাপিটালস।
আরব আমিরাতের স্লো পিচে শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রীতি জিনতার দলের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন পাঞ্জাব বোলাররা। শুরুতেই পরপর তিন উইকেট পড়ে যায় দিল্লির। ধাওয়ান শূন্য রানে রানআউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। পৃথ্বি শ (৫) এবং শিমরন হেটমায়ার (৭) শিকার হন মোহাম্মদ শামির। কিন্তু এরপরই ম্যাচে ফেরে দিল্লি। অধিনায়ক শ্রেয়াস আয়ার এবং রিশাভ পান্ত পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শ্রেয়াস করেন ৩৯ রান। অন্যদিকে, রিশভের সংগ্রহ ৩১ রান। তবুও স্কোরবোর্ডে তখন কোনও গতি ছিল না।
তবে শেষদিকে পালটা মারে দিল্লির রানকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে মার্কাস স্টোইনিজ। রানআউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৭টি বাউন্ডারি, তিনটি ছক্কা। মূলতঃ তার বদৌলতেই দিল্লির রান নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেটে ১৫৭ রানে পৌঁছায়।
পাঞ্জাব বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেন মোহাম্মদ শামি। চার ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। শুরুতে জোড়া ধাক্কা দেওয়ার পর দিল্লি অধিনায়ককেও আউট করেন শামি। এর আগে শামির সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ছিল ২১ রানে ৩ উইকেট। যা তিনি কিংসদের হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে করেছিলেন। শামি ছাড়া দু’টি উইকেট পেয়েছেন শেলডন কটরেল এবং একটি পেয়েছেন রবি বিষনোই।
ধীরে ধীরে আরও স্লো হয়ে যাওয়া উইকেটে ১৫০ এর উপরে যে কোনও রান তাড়া করা কঠিন চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ জিততে গিয়ে শুরুতেই বেকায়দায় পড়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। প্রথম পাঁচ ওভারে যেখানে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৩৩। সেখানে দশ ওভারে রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫৫।
অর্থাৎ ওই পাঁচ ওভারে ২২ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারায় পাঞ্জাব। দিল্লি বোলারদের মাপা লাইন লেংথের সামনে ব্যর্থ হন করুন নায়ার (১), নিকোলাস পুরান (০), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১), সরফরাজ খান (১২) প্রত্যেকেই।
তবে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল শুরুটা ভাল করলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। তিনি আউট হন ২১ রানে। দশ ওভারের পর সবাই যখন ধরে নিয়েছে ম্যাচ দিল্লির দখলে, তখনই জ্বলে ওঠেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়েই পাল্টা লড়াই শুরু করেন তিনি।
৪৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর খোলস ছেড়ে বের হন। মোহিত শর্মার ১৮ তম ওভারে ১৭ রান নেন মায়াঙ্ক। মূলতঃ স্টোইনিজ যে ইনিংসটি পরের দিকে নেমে খেলেছিলেন, সেটিই খেলতে দেখা যায় মায়াঙ্ককে। এর মধ্যেই আবার ১৯ তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে অধিনায়ক শ্রেয়াসের হাত থেকে পাঞ্জাব ওপেনারের সহজ ক্যাচও পড়ে যায়। বলতে গেলে একেবারে একক কৃতিত্বেই ম্যাচ একদম শেষপর্যন্ত টেনে নিয়ে আসেন আগরওয়াল। কিন্তু নাটক তখনও বাকি ছিল।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রানের। প্রথম তিন বলে চলে আসে ১২ রান। পরের বলে কোনও রান হয় না। তখনও দরকার ছিল ২ বলে ১ রানের; কিন্তু পরপর দুই বলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মায়াঙ্ক এবং ক্রিস জর্ডনকে ফিরিয়ে দিল্লিকে ম্যাচে ফেরান স্টোইনিজ। শেষপর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। কিন্তু সেখানে বাজিমাত করেন কাগিসো রাবাদা। প্রথম বলে দু’রান দেওয়ার পর পরপর দু’বলে রাহুল এবং পুরানকে ফিরিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। আর মাত্র তিনরান তাড়া করতে নেমে সহজেই জিতে যায় দিল্লি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সামিউল্লাহ সামি। নির্বাহী সম্পাদক : মহসিন রায়হান। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আকরাম হোসাইন। সহ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : ওমর ফারুক। আইন উপদেষ্টা : মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট বাংলাদেশ সু্প্রিম কোর্ট ঢাকা।
প্রধান কার্যালয় : ২১৯ মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএকে টাওয়ার (৯ম তলা), প্লট নং ১/এ, নিশাত নগর, তুরাগ, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। 📲 মোবাইল : ০১৭১৩৯২৬২৭৭, ০১৭১০১০১৬৯৯। বিজ্ঞাপন : ০১৭৭ ৯৭৪৬৬০৭ ☎️ ফোন : +৮৮০৯৬৩৮১৯২৪।
📧 Email : khoborerdakghar@gmail.com
“দৈনিক খবরের ডাকঘরে” প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখক/প্রতিনিধির। আমরা লেখক/প্রতিনিধির চিন্তা ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল সব সময় নাও থাকতে পারে । তাই যে কোনো লেখার জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। ডেইলি খবরের ডাকঘর
about-us contact-us privacy-policy terms-and-conditions
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত খবরের ডাকঘর. কম ©২০১৮ -২০২১||
Leave a Reply