ক্রীড়া ডেস্ক : ব্যাট হাতে প্রিয়ামের ঝড় ও বল হাতে রশিদের ঘূর্ণিতে চেন্নাই সুপার কিংসকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এবারের আইপিএলের সবচেয়ে বাজে শুরু করেছিল হায়দরাবাদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরপর দুই ম্যাচে জয় তুলে নিলো তারা। আসরের ১৪তম ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৬৪ রান করেছিল হায়দরাবাদ। জবাবে চেন্নাইয়ের ইনিংস থেমেছে ৭ উইকেটে ১৫৭ রান করে।
এই ম্যাচের আগে দুই দলই নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ থেকে জিতেছিল একটি করে। চেন্নাইকে ৭ রানে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো হায়দরাবাদ। যার সুবাদে পয়েন্ট টেবিলের চার নম্বরে উঠে গেছে তারা। অন্যদিকে চার ম্যাচে তিনটিতেই হেরে সবার নিচে অবস্থান করছে আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সফল দল চেন্নাই।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হায়দরাবাদের ছুড়ে দেয়া ১৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দেয় চেন্নাইয়ের টপঅর্ডার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার শেন ওয়াটসন, ছয় বল খেলে করেন মাত্র ১ রান। দলের সংগ্রহ তখন ১ উইকেটে ৪ রান।
এমন শুরুর পর ধাক্কা সামাল দেয়ার দায়িত্ব ছিলো তিন নম্বরে নামা আম্বাতি রাইডুর ওপর। কিন্তু তিনিও সাজঘরের পথ ধরেন ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে, করেন ৯ বলে মাত্র ৮ রান। একই ওভারের শেষ বলে দূর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হন ছন্দ খুঁজে পাওয়ার আভাস দেয়া ফাফ ডু প্লেসি। তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২২ রান।
পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারেই টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে কঠিন চাপে পড়ে যায় চেন্নাই। যা আরও বেড়ে যায় নবম ওভারে কেদার যাদবের বিদায়ে। দলকে অকূল পাথারে নামিয়ে দিয়ে কেদার আউট হন মাত্র ৩ রান করে। ইনিংসের ৮.২ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৪২ রান। দলীয় পঞ্চাশ রান করতে তাদের খেলতে হয় ১১ ওভার পর্যন্ত।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে শুরুতে রয়ে-সয়ে এবং পরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে লড়াইয়ের বার্তা দেন চেন্নাইয়ের দুই বড় তারকা রবিন্দ্র জাদেজা এবং অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। শুরুতে ব্যাটে-বলে ঠিকভাবে করতে পারছিলেন দুজনের কেউই। একপর্যায়ে ১৬ বলে মাত্র ৮ রান নিয়ে খেলছিলেন জাদেজা, ধোনির রান ছিল ২২ বলে মাত্র ১৭ রান।
এমন ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে বাড়তে থাকে আস্কিং রেটের চাপ। ইনিংসের ১৫ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৭৯ রান, শেষের ৩০ বলে বাকি থাকে আরও ৮৬ রান। তখন বোলিং করতে এসে মাত্র ৮ রান দেন রশিদ খান, ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে শেষ হয় তার স্পেল। সমীকরণ তখন দাঁড়ায় ২৪ বলে ৭৮ রানের।
ম্যাচের এমন কঠিন অবস্থায় এসে যেনো হুঁশ ফেরে জাদেজার। ভুবনেশ্বর কুমারের করা ১৭তম ওভারের প্রথম তিন বলে টানা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তুলে নেন ১৫ রান। পরের ওভারের প্রথম তিন বলেই আরও ১৪ রান করেন জাদেজা। মাত্র ৩৪ বলে তুলে নেন নিজের ফিফটি। তবে এরপরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। থেমে যায় ৩৫ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ের মারে করা লড়াইটি।
জাদেজার বিদায়ে একা বনে যান ধোনি, তখনও জিততে হলে ১৪ বলে করতে হতো ৫১ রান। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকান স্যাম কুরান। যা হয়তো খানিক আশা জাগিয়েছিল ধোনিসহ চেন্নাই ভক্ত-সমর্থকদের মনে। কিন্তু সমীকরণ কখনওই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি চেন্নাই।
শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য করতে হতো ৪৪ রান। ১৯তম ওভার করতে এসেছিলেন ভুবনেশ্বর। কিন্তু এক বল করার পরেই পায়ের ইনজুরিতে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ফলে সেই ওভারের বাকি পাঁচ বল করেন খলিল আহমেদ। একটি করে চার ও ছয়ের মারে ১৯তম ওভার থেকে মোট ১৬ রান নেন ধোনি।
ফলে শেষের ৬ বলে আরও ২৮ রানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় চেন্নাইয়ের। হাতে আর কোনো বোলার না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই শেষ ওভারটি লেগস্পিনার আব্দুল সামাদকে করতে দেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। প্রথম বলেই ওয়াইডের সঙ্গে হজম করে হায়দরাবাদের ভক্ত-সমর্থকদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেন সামাদ।
তবে পরের পাঁচ বলে একটি চারসহ মাত্র ৯ রান দেন সামাদ। শেষ বলে বাকি থাকে ১৪ রান। বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে পরাজয়ের ব্যবধানটা ৭ রানে নামিয়ে আনেন ৫ বলে ১৫ রান করা স্যাম কুরান। ধোনি অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৪৭ রান নিয়ে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে একদম শুরুতেই হোঁচট খায় হায়দরাবাদ। ইনিংসের চতুর্থ বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে জনি বেয়ারস্টোর (০) উইকেট উপড়ে ফেলেন দীপক চাহার। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা ডেভিড ওয়ার্নার আর মনিশ পান্ডের।
৩৯ বলে তাদের ৪৭ রানের জুটিটি ভাঙে মনিশ ফিরলে। ২১ বলে ২৯ রান করে এই ব্যাটসম্যান শার্দুল ঠাকুরের বলে ক্যাচ দেন স্যাম কুরানকে। চেন্নাই বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ডেভিড ওয়ার্নারও হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। ২৮ বলে ২৯ রানে তিনি শিকার হন পিযুষ চাওলার। এরপর ৯ রানে রানআউট কেন উইলিয়ামসনও। ৬৯ রানে ৪ উইকেট হারায় হায়দরাবাদ।
সেই বিপদ থেকে দলকে টেনে তুলেন প্রিয়াম গার্গ আর অভিষেক শর্মা। পঞ্চম উইকেটে ৪৯ বলে ৭৭ রানের বড় এক জুটি গড়েন তারা। ১৮তম ওভারে নানা নাটকীয়তার পর এই জুটিটি ভাঙে।
দীপক চাহারের ওভারের প্রথম দুই বলে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন অভিষেক। প্রথমবার জাদেজা, পরেরবার শার্দুল ঠাকুর ক্যাচ ফেলে দেন। তবে ওই ওভারের শেষ বলে ঠিকই আউট হন অভিষেক, উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ২৪ বলে ৩১ করে।
তবে প্রিয়াম গার্গ মারমুখী ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন ২৩ বলে। তার পরের বলেই অবশ্য ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন, নো বলে বেঁচে যান। শেষতক ২৬ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন গার্গ।
চেন্নাইয়ের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন দীপক চাহার, ৪ ওভারে ৩১ রান খরচায় নিয়েছেন ২টি উইকেট।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সামিউল্লাহ সামি। নির্বাহী সম্পাদক : মহসিন রায়হান। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আকরাম হোসাইন। সহ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : ওমর ফারুক। আইন উপদেষ্টা : মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট বাংলাদেশ সু্প্রিম কোর্ট ঢাকা।
প্রধান কার্যালয় : ২১৯ মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএকে টাওয়ার (৯ম তলা), প্লট নং ১/এ, নিশাত নগর, তুরাগ, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। 📲 মোবাইল : ০১৭১৩৯২৬২৭৭, ০১৭১০১০১৬৯৯। বিজ্ঞাপন : ০১৭৭ ৯৭৪৬৬০৭ ☎️ ফোন : +৮৮০৯৬৩৮১৯২৪।
📧 Email : khoborerdakghar@gmail.com
“দৈনিক খবরের ডাকঘরে” প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখক/প্রতিনিধির। আমরা লেখক/প্রতিনিধির চিন্তা ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল সব সময় নাও থাকতে পারে । তাই যে কোনো লেখার জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। ডেইলি খবরের ডাকঘর
about-us contact-us privacy-policy terms-and-conditions
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত খবরের ডাকঘর. কম ©২০১৮ -২০২১||
Leave a Reply