রেজা মাহমুদ, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডিমলায় পৃথক স্থান থেকে এক কলেজ ছাত্রী ও দুই সন্তানের এক জননী সহ দুই নারীর রহস্যজনক লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তবে এসব ঘটনার কয়েক ঘন্টা অতিবাহিত হলেও পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।

জানা যায়, সোমবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের রুপাহারার ডাঙ্গা পাড়া গ্রামের নিজ বাড়ির শয়ন ঘরে ওড়না পেঁচানো রিমু আক্তার (১৭)নামের এক কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় প্রতিবেশি এক শিশু।পরে শিশুটি তার পিতাকে বিষয়টি জানালে পরিবারের লোকেরা ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে ডিমলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীটিকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে লাশটি পুনরায় বাড়িতে নিয়ে এসে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ থানায় নিয়ে যায় ।
এ সময় পুলিশ ছাত্রীটির ব্যবহৃত মোবাইল ও দুটি চিঠি উদ্ধার করেন। ছাত্রীটি একই এলাকার দিনমুজুর মজিবুল ইসলাম ওরফে বোগার মেয়ে এবং স্থানীয় সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।

অপরদিকে একইদিন বিকেলে ডিমলা সরকারি হাসপাতালে দুই সন্তানের জননী মুক্তা চন্দ্র রায়(২৮) নামের এক গৃহবধুর লাশ রেখে পালিয়ে যায় তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা।
ওই গৃহবধু উপজেলার ডিমলা সদর ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত, রমেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে মাছ ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র রায় ওরফে ঘুঘুর স্ত্রী ও নীলফামারী সদরের কবরস্থান মোড় সংলগ্ন সওদাগর পাড়ার নরেশ চন্দ্র রায়ের মেয়ে। পুলিশ হাসপাতালে ওই গৃহবধূর লাশের প্রাথমিক সুরতহাল করা হয়।

ওই গৃহবধুর পিতার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে মুক্তার সাথে সুমনের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই কারনে-অকারনে তার স্বামী ও শশুর পরিবারের লোকেরা মুক্তাকে অমানবিক নির্যাতন করত। কিন্তু আমরা তার দুটি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিরবে তা মেনে নিয়ে মুক্তাকে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে বলে বুঝিয়ে আসতাম। ঘটনার দিন মুক্তাকে তার স্বামী ও তার স্বামীর পরিবারের লোকেরা অমানবিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে তার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।পরে দেবর সুধিরসহ কয়েকজন তাকে ডিমলা সরকারি হাসপাতালে আনলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করায় লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়।দুটি লাশই ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং উভয় ঘটনাস্থল ও গৃহবধুর লাশের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার-ডিমলা সার্কেল) জয়ব্রত পাল এবং ডিমলা থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম।