নিজস্ব প্রতিবেদক : চাল, ডাল, তেল, সবজি—সব পণ্যের দামই চড়া। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় করতে হিমশিম খাচ্ছে এসব নিত্যপণ্যের ক্রেতা-ভোক্তারা। এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতেও স্বস্তি রয়েছে ফার্মের মুরগির বাজারে। ব্রয়লার মুরগির দাম এখন প্রায় তলানিতে। ডিমের দাম কিছুটা বেশি হলেও উৎপাদন খরচের তুলনায় তা খুব বেশি নয় বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্যান্য পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ আমিষের চাহিদা পূরণ করতে ফার্মের মুরগির ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে।
রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও ১১০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। উৎপাদন পর্যায়ে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা কেজি পর্যন্ত, পাইকারিতে ১০৫ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া সোনালি জাতের মুরগি পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি খুচরা বাজারে সাধারণত পিস হিসেবে বিক্রি হয়। এ ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা পিস।
বিক্রেতারা বলছেন, হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো এখনো আগের মতো চালু হয়নি, বিয়েশাদিসহ সামাজিক অনুষ্ঠানাদিও খুব বেশি হচ্ছে না। ফলে ফার্মের মুরগির চাহিদা আগের মতো নেই। তবে সাধারণ ভোক্তারা কয়েক মাস আগের তুলনায় ব্রয়লার, সোনালিসহ ফার্মের মুরগি কিনছে বেশি। প্রান্তিক পর্যায়ের উৎপাদনকারীরা দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর আবার মুরগি ও ডিম উৎপাদন শুরু করেছেন। এতে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি রয়েছে। তাই সাধারণ মানুষ এখন কম দামে মুরগি খেতে পারছে।
জানতে চাইলে গোপীবাগ বাজারের মুরগি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন ইলিশ মাছের বেচাবিক্রি বেশি ছিল, একই সঙ্গে অনুষ্ঠানাদিও কম ছিল, তাই মুরগি বিক্রি কিছুটা কম হতো। এখন আবার আস্তে আস্তে বাড়ছে। দাম কম থাকায় মানুষ মুরগির দিকে ঝুঁকছে। তিনি দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ পিস ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে পারেন বলে জানান, যা আগে ১০০ পিসের মধ্যে ছিল।
জানা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফার্মের মুরগি ও ডিম এসে রাজধানীর তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, কাপ্তানবাজার, যাত্রাবাড়ীসহ মোট ১৭টি পাইকারি বাজারে জড়ো করেন ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে বিভিন্ন ছোট ছোট বাজারে সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, খামার পর্যায়ের দামের সঙ্গে ডিমে পিসপ্রতি ১৫ পয়সা এবং মুরগিতে কেজিপ্রতি ১০ টাকা যোগ করে বিক্রি করনে তাঁরা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা যায়, গত বছর এই সময় দেশে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৪০ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে বাজারে মুরগির দাম কমেছে ১১ শতাংশ। একই অবস্থা ডিমের বাজারেও। ডিমের দাম কমেছে ৭ শতাংশ।
খুচরা বাজারে ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা ডজন বা সোয়া ৯ টাকা পিস দরে। উৎপাদন বা পাইকারি পর্যায়ে গতকাল ফার্মের ডিমের দাম ছিল ৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৮ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত। এ ছাড়া সাদা ডিম কিছুটা কমে ৭ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ৮ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
বাজারে বর্তমানে লোকসানি মূল্যে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিনের। তিনি বলেন, পোল্ট্রি মুরগি ১০৫ টাকা কেজির ওপর বিক্রি করলে উৎপাদকদের মুনাফা থাকে। তবে এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এবং মুরগির চাহিদা খুব একটা না থাকায় দাম একেবারেই কম রয়েছে। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে মুরগি ও ডিম খাওয়া বাড়াতে পারে মানুষ।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, বর্তমানে ব্রয়লার, সোনালি মুরগিসহ দৈনিক ৪৮ লাখ কেজি মাংস উৎপাদন হচ্ছে। করোনার আগেও এর পরিমাণ ছিল ৪২ থেকে ৪৩ লাখ কেজি। যদিও মাঝখানে করোনার সময় কিছুটা কম ছিল, কিন্তু এখন আবার বেড়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে পোল্ট্রি খাতে মোট তিন হাজার ৫৬৩ লাখ ১৮ হাজার হাঁস ও মুরগি উৎপাদন হয়েছিল, যা আগের বছর ছিল তিন হাজার ৪৭০ লাখ ৩৫ হাজারটি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সামিউল্লাহ সামি। নির্বাহী সম্পাদক : মহসিন রায়হান। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আকরাম হোসাইন। সহ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : ওমর ফারুক। আইন উপদেষ্টা : মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট বাংলাদেশ সু্প্রিম কোর্ট ঢাকা।
প্রধান কার্যালয় : ২১৯ মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএকে টাওয়ার (৯ম তলা), প্লট নং ১/এ, নিশাত নগর, তুরাগ, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। 📲 মোবাইল : ০১৭১৩৯২৬২৭৭, ০১৭১০১০১৬৯৯। বিজ্ঞাপন : ০১৭৭ ৯৭৪৬৬০৭ ☎️ ফোন : +৮৮০৯৬৩৮১৯২৪।
📧 Email : khoborerdakghar@gmail.com
“দৈনিক খবরের ডাকঘরে” প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখক/প্রতিনিধির। আমরা লেখক/প্রতিনিধির চিন্তা ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল সব সময় নাও থাকতে পারে । তাই যে কোনো লেখার জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। ডেইলি খবরের ডাকঘর
about-us contact-us privacy-policy terms-and-conditions
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত খবরের ডাকঘর. কম ©২০১৮ -২০২১||
Leave a Reply