তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ( আইসিটি ) ব্যবহার এদেশে খুব বেশি দিনের নয়। হাটিহাটি পা পা করে সর্বক্ষেত্রে আইসিটির ব্যবহার এখন লক্ষনীয়। সংবাদ মাধ্যমেও এর প্রভাব পরেছে বৈকি।
প্রিয় পাঠক, আজকে কলম ধরলাম অনলাইন সাংবাদিকতা তথা অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ পত্রের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে। নব্য ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও অনলাইন ভিত্তিক সংবাদপত্রগুলো মিডিয়া জগতে আমূল পরিবর্তন এনেছে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যে প্রায় সাত হাজার অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে,যা যাচাই সাপেক্ষে নিবন্ধনধীত হবে । এর বাহিরে প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে অসংখ্য নিউজ পোর্টাল । গত ৩০ জুলাই ৩৪টি নিউজ পোর্টালকে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচিত করে তথ্য মন্ত্রণালয় এবং এ প্রক্রিয়া চলমান।
এবার আসা যাক, প্রিন্ট মিডিয়া জগতের কথা। এ মুহূর্তে দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার সঠিক সংখ্যা কত তা বলা মুশকিল। তবে সংখ্যাটি নেহাত কম না । চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত জুন/ ২০২০ তারিখের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে নিবন্ধিত পত্র-পত্রিকার সংখ্যা ৩১৮৯টি (অনলাইন গণমাধ্যম অন্তর্ভূক্ত নয়) যার মধ্যে ১৩৪৫টি ঢাকা থেকে এবং ১৮৪৪টি অন্যান্য জেলা থেকে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে দৈনিক ১২৯৪টি, অর্ধ-সাপ্তাহিক ৩টি, সাপ্তাহিক ১২১০টি, পাক্ষিক ২১৬টি, মাসিক ৪২৪টি, দ্বি-মাসিক ৮টি, ত্রৈ-মাসিক ২৯টি, চর্তুমাসিক ১টি, ষান্মাসিক ২টি এবং বার্ষিক ২টি পত্রিকা রয়েছে। কালের গর্ভে অনেক পত্রিকা হারিয়ে গেলেও প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পত্রিকা। তবে তা টিকে থাকাটা দুস্কর হয়ে পরছে।
আবহমান কাল ধরে প্রিন্ট মিডিয়া গুলো শিক্ষা, সংস্কৃতি,রাজনীতি , আন্দোলন ,সংগ্রামে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। শিল্পী,সাহিত্যিক ,কবি,লেখক সৃষ্টিতে ও অসামান্য অবদান রাখছে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। এক সময় প্রিন্ট মিডিয়ায় সৃজনশীল লেখক ও সাংবাদিকের কদর থাকলেও বর্তমানে নেই বললে চলে। আগে যেখানে দীর্ঘ সময় লেখার পর কোনো পত্রিকার সাংবাদিকতার স্বীকৃতি মিলতো কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার গুলোর অধিকাংশই বর্তমানে অর্থের বিনিময়ে সংবাদ প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে থাকে। এমন অভিযোগ প্রায় শোনা যায়।অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে সৃজনশীল লেখক ও প্রকৃতদশা সাংবাদিকতার অপমৃত্যু হবে একথা বলা যায়। ফলে অপ সাংবাদিকতায় ভরে যাবে আমাদের প্রিন্ট মিডিয়া জগৎ তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
পক্ষান্তরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলো যেভাবে নিজেকে জাহির করে যাচ্ছে এবং তাদের পালে যেভাবে হাওয়া লাগতে শুরু করছে। এতে করে একদিন হয়তো মিডিয়া জগৎ অনলাইন সাংবাদিকতার দখলে থাকবে। একথা বললে বোধ হয় ভুল হবে না। কারণ কোনো ঘটনা ঘটা মাত্র অনলাইন সাংবাদিকতাই পারে দ্রুত তুলে ধরতে। ফলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব । সবচেয়ে বড় কথা হল অনলাইন সাংবাদিকতায় সৃজনশীলতার মূল্য অনেক। এখানে একদিনে সাংবাদিক হওয়া কিংবা অর্থের বিনিময়ে সাংবাদিক হওয়া এমনটা ভাবা যায় না। তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্রিন্ট মিডিয়া হচ্ছে ডিজিটাল যুগে এনালগ সিষ্টেম। পৃথিবীর অনেক দেশে এর কদর ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে দুর্যোগ কিংবা মহামারীর সময় অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম গুলোই সংবাদ পরিবেশনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে একথা এখন সর্বজন স্বীকৃত ।
তবে অত্যন্ত অল্প সময়ে অসংখ্য অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মিডিয়ার আবির্ভাব সুখকর হলেও ভূঁইফোর ও ঠিকানা বিহীন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম গুলোর প্রচার বন্ধ করে, সঠিক ও নির্ভরযোগ্য অনলাইন সংবাদ মাধ্যম গুলোর মূল্যায়ন করা গেলে সবার জন্য মঙ্গল হবে। এই হোক মোদের প্রত্যাশা।
লেখকঃ রমেশ চন্দ্র সরকার
(শিক্ষক ও সাংবাদিক)
নির্বাহী সম্পাদক : মহসিন রায়হান। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আকরাম হোসাইন। সহ-ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : ওমর ফারুক। আইন উপদেষ্টা : মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, এডভোকেট বাংলাদেশ সু্প্রিম কোর্ট ঢাকা।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২১৯ মাজার রোড, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
📱 হটলাইন : ০১৭১৩৯২৬২৭৭, ০১৭১০১৪২০১৭।
📧 Email : khoborerdakghar@gmail.com
“দৈনিক খবরের ডাকঘরে” প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখক/প্রতিনিধির। আমরা লেখক/প্রতিনিধির চিন্তা ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল সব সময় নাও থাকতে পারে । তাই যে কোনো লেখার জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। ডেইলি খবরের ডাকঘর কতৃপক্ষ।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত খবরের ডাকঘর নিউজ. কম ©২০১৮ ||
Leave a Reply